বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বেঁচে থাকার আকুতি জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধাপুত্র কাজল মিয়া (৩০)। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াছ মিয়ার ছেলে তিনি।
সেদিনের টগবগে তরুণ কয়েকদিনের ব্যবধানে আজ মৃত্যুপথযাত্রী এমন খবর এলাকায় চাউর হলে মঙ্গলবার (২৩ মে) সকালে সরজমিনে যান এ প্রতিবেদক। সাংবাদিক পরিচয় জেনে হাউমাউ করে কেঁদে কেঁদে কাজল বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।
আমি অর্থের অভাবে চিকিৎসা করতে পারছি না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে বাঁচান, আমি বাঁচতে চাই। চার সন্তানকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন বলেও জানান তিনি। কাজলের কান্নায় প্রতিবেশীরা জড়ো হলে এক আবেগঘন পরিস্থিতি তৈরি হয়।
জানা গেছে, লিভার, ডায়বেটিসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে এখন শয্যাশায়ী ৭১-এর রণাঙ্গনের এই বীর সেনানীপুত্র। সন্তানদের মায়ায় সাধ্যনুযায়ী জেলা শহর, সিলেট-ময়মনসিংহ হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছেন তাঁর অসহায় স্ত্রী। দিনমজুরি করে স্বামীর সংগ্রহীত অর্থ ব্যয় করে এখন চিকিৎসা দূরের কথা, ঘরে চুলা জ্বলে না প্রায়।
চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে কাজল জানিয়েছেন, রাজধানীর উন্নত যে কোন হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণে সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। যেখানে তার অভাবের সংসারে চুলা জ্বলে না সেখানে চিকিৎসার খরচ মেঠাবে কিভাবে এমন প্রশ্ন কাজলের। চার সন্তানের জনক বীর মুক্তিযোদ্ধাপুত্র কাজলের সংসার চলতো দিনমজুরি করে।
প্রায় ৬ মাস আগে হঠাৎ অসুস্থতা অনুভব করলে জেলা শহরের হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর অবস্থার অবনতি হলে পরবর্তীতে সিলেট- ময়মনসিংহ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন কাজল। ততক্ষণে অর্থের উৎস শূন্যের কোঠায়। এরপর ধেকে শয্যাশায়ী হওয়ায় চিকিৎসা তো দূরের কথা খেয়ে না খেয়ে দিন যায় রণাঙ্গনের বীর সেনানীপু্ত্রের পরিবারে।
প্রয়োজনে 01779-231704 নাম্বরে যোগাযোগ করা যাবে কাজলের সাথে। উল্লেখ্য, কাজলের ৫ ভাই এক বোন থাকলেও সবাই সংসারমুখী হয়ে পৃথক জীবনযাপন করছেন। অপরদিকে বৃদ্ধা মা-সবার সাথে বসবাস করে যাচ্ছেন। ফলে পিতার নামে সরকারের দেয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা সমবন্টনে চলে যায়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তাহিরপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার রফিকুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে সরকার সব সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন। তারপরেও সহায়তা কামনা করলে বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাউকে ফিরিয়ে দেন না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সকল ধরণের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেছেন। তারপরেও যদি সহায়তার প্রয়োজন হয় তাহলে আবেদন পেলে সরকারিভাবে সহায়তার চেষ্টা করা হবে।
পিকে/এসপি
মুক্তিযোদ্ধাপুত্র কাজলের বাঁচার আকুতি
- আপলোড সময় : ২৩-০৫-২০২৩ ০৫:৫৩:৩৮ অপরাহ্ন